হোম পেজ মুক্ত চিন্তা ইসলামে পীর মুরীদি : পীর ধরা জায়েজ কিনা?

ইসলামে পীর মুরীদি : পীর ধরা জায়েজ কিনা?

ডা. বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী

490
4

ইসলামে পীর মুরীদি : পীর ধরা জায়েজ কিনা?
কাকে সত্য বলবেন?

কোরানুল হাকিমে আমরা পঁচিশ জন নবির নাম পাই। আদম শফিউল্লাহ হতে নেমে এসে ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ এবং ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ থেকে নেমে এসে ইসা রুহুল্লাহ (ইসা নফ্স উল্লাহ বলা হয়নি কারণ আল্লাহ্র নফ্স নাই)। প্রতিটি নফ্স তথা প্রাণ একটি বারই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে। কিন্তু রুহ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে না। ‘কুললু রুহিন জায়কাতুল মউত’ তথা রুহ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে, এই কথাটি কোরানে কোথাও নাই। রুহ জন্মগ্রহণ করে না, ঘুমায় না, ক্লান্তির অবসাদ থাকে না, যাহা নফ্সের তথা প্রাণের জন্য প্রযোজ্য। ইসা নবিকে আল্লাহ নিজেই রুহুল্লাহ বলেছেন তথা আল্লাহর রুহ বলেছেন। তাই ঊর্ধ্ব আকাশে আল্লাহ উঠিয়ে নিলেন। মহানবি মোহাম্মদকে বন্ধু বলেছেন। যেহেতু মহানবি আল্লাহর বন্ধু তাই ইসা নবিকে ইমাম মেহদি রূপে মহানবিকে কেন্দ্র করে ধরাধামে আবার আসতে হবে। মহানবির পরম প্রিয় ইমাম হোসাইনের ষষ্ঠ বংশধর ইমাম আলি রেজার বংশ হতে সুলতানুল হিন্দ খাজা বাবার আগমন। সমগ্র ভারতবর্ষে তখন চারকোটি লোকের বসবাস ছিল। জৈন ধর্ম, হিন্দু ধর্ম, পার্সি ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিল তারা। খাজা বাবা এই ভারতবর্ষে আগমন করে ইসলাম ধর্ম প্রচার করে বিরানব্বই লক্ষ মানুষকে মুসলমান বানিয়েছেন। কোরানে বর্ণিত পঁচিশ জন নবি একত্রে মিলেও খাজা বাবার বারো ভাগের এক ভাগও মুসলমান বানাতে পারেন নাই। সেই খাজা বাবার পীরের নাম ছিল খাজা ওসমান হারুনি।

খাজা ওসমান হারুনির মুরিদ ও প্রধান খলিফা ছিলেন খাজা বাবা। মানুষের রচিত কোরান বলে অভিহিত যে গ্রন্থটি রচনা করে গেছেন সেই গ্রন্থের নাম মসনবি শরিফ। লিখেছেন মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী এবং উনার পীরের নাম বাবা শামসে তাব্রীজ। বিশ্ববিখ্যাত এহিয়ায়ে উলুমুদ্দীন রচয়িতা ইমাম গাজ্জালির পীরের নাম আবু আলি ফারমাদি। হজরত মুজাদ্দেদে আল ফেসানি সিরহিন্দ এর পীরের নাম বাবা বাকিবিল্লাহ। হজরত বাহাউদ্দীন নকশেবন্দির পীরের নাম বাবা আমির কুলাল। হজরত আলাউদ্দীন কালিয়ার সাবেরির পীরের নাম বাবা শেখ ফরিদউদ্দীন গঞ্জেশকর। মাহবুবে এলাহি নিজামউদ্দীন আউলিয়ার পীরের নাম বাবা ফরিদউদ্দীন গঞ্জেশকর। হজরত বু আলি শাহ কালান্দার পানিপথির পীরের নাম বাবা শেখ ফরিদউদ্দীন গঞ্জেশকর। হজরত বাবা শেখ ফরিদউদ্দীন গঞ্জেশকরের পীরের নাম বাবা কুতুবউদ্দীন বখতিয়ার কাকি।

এই রকমভাবে লক্ষ লক্ষ ওলি, গাউস, কুতুব, আবদাল, আরিফেরা সবাই পীর ধরেছেন। আর সালাফি ফেরকা, ওহাবি ফেরকা, বাটালোভি ফেরকা এবং চাকরালোভি ফেরকার অনুসারীরা পীর ধরাকে হারাম মনে করেন এবং এই চারটি ফেরকা কেবলমাত্র আল্লাহ্র ইবাদত করার আদেশ-উপদেশ দেয়। এই চার ফেরকার মধ্যে সবচাইতে ভয়ঙ্কর ফেরকা হলো সালাফি ফেরকা। এই ফেরকার অনুসারীরা মহানবি মোহাম্মদকে মেনে নেওয়া তো দূরের কথা হারাম হারাম বলে ঘোষণা করে। এই সালাফি ফেরকার অনুসারী হলো মাননীয় ডা. জাকির নায়েক।
এখন যে প্রশ্নটি আসে উহা হলো, এই লক্ষ লক্ষ গাউস, কুতুব, আবদাল, আরিফ, মুফতাখারাজুয়েরা পীরপূজা করে ওলি হয়েছেন এবং এই সকল সুফিরাই মুসলমান বানিয়ে গেছেন। এই সকল ওলিরা যদি পীর ধরে হারাম কাজটি করে থাকেন তাহলে সালাফি, ওহাবি, বাটালোভি, চাকরালোভি ফেরকার অনুসারীরা মোমিন মুসলমান হয়ে যান আর যদি এই সকল ওলি, গাউস, কুতুব, আবদাল, আরিফেরা সত্যবাদী হয়ে থাকেন তাহলে সালাফি, ওহাবি, বাটালোভি, চাকরালোভিদের কী বলা যায় তার বিচারের ভার পাঠকদের উপরেই ছেড়ে দিলাম।

মারেফতের গোপন ভেদ-রহস্য
-ডা. বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী

Author

4 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here