হোম পেজ মুক্ত চিন্তা ইসলামিক জীবন দর্শন একমাত্র ‘সুফিবাদই’ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে – বাবা জাহাঙ্গীর

একমাত্র ‘সুফিবাদই’ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে – বাবা জাহাঙ্গীর

ডা. বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী

152
0

একমাত্র ‘সুফিবাদই’ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে 

[প্রাণ ও পরম- এর রহস্য]

প্রাণ এবং পরম এক নয়। প্রাণ – পরমের প্রশ্নে সবাই ভুল করে। দার্শনিকরাতো আরও ভুল করে। ভাষার শব্দের গাঁথুনির অভাবে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ ভুল করেছেন। দেবতাদের রাজা মহাদেবও ভুল করেছেন। আসলে এই ভুলটি ভুল নয়। ভাষার অভাবে তারা বাধ্য হয়ে ভুল করেছেন। তারা জেনে-শুনে ভুল করতে বাধ্য হয়েছেন। কোথায় প্রান আর কোথায় পরম! আর সাধারন পীর-ফকিরেরা, ওলি -দরবেশরাও ভুল করে কিন্তু বিগার কমে না। বিগার মানে ঠাট-বাট – অহংকার। কিচ্ছু জানে না অথচ পীর হয়ে বসে আছেন।ভিতরে কোন মালই নেই কিন্তু পরে আছেন সুন্নতি লেবাস। এই রকম সুন্নতি লেবাস মহানবি পরেছেন কিনা সন্দেহ! ইহা কি তথাকথিত সুন্নত, না আসল সুন্নত? তাহা আমার জানা নাই। প্রান আর পরমের পার্থক্যটি করে গেছেন,পৃথিবীর বুকে একমাত্র মহানবী আবুল কাসেম হজরত মোহাম্মাদ (সা.)। মহানবী বলে গেছেন, প্রানের নাম নফস আর পরমের নাম রুহ। এই নফস আর রুহের পার্থক্যটি মোল্লারা বোঝে না। মোল্লারা কিছুই জানে না। তাই খুব বেশি বকবক করে। আর সাধারন মানুষের মাথায় গরু-মহিষের মগজ থাকাতে ‘সোবহানাল্লাহ’ বলে চিৎকার করে। সাধারন মানুষ বানরের চেয়ে একটু উচায়। সাধারন মানুষকে বোঝালেই কী আর না বোঝালেই কী! সাধারণ মানুষের নাকে গোলাপ ফুল ধরলে জিহ্বা বের করে খেতে চায়। কোন মোল্লার মুখে শুনলাম না এই হাদিসটি :“এক ঘন্টা জ্ঞান অর্জন সত্তর বছর এর ইবাদতের চেয়ে উত্তম।” তাহলে এই জ্ঞান আমরা কোথা হতে অর্জন করব? জ্ঞান অর্জন করতে হলে পাঠাগার, স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি হতে জ্ঞান অর্জন করা যায়। এই জ্ঞান অনুসরণ-অনুকরণ করার জ্ঞান। অপরটি হলো সৃষ্টি করার তথা সৃজনীশক্তির অধিকারি হওয়া। অনুসরণ -অনুকরণ এর জ্ঞান অর্জন করতে হলে বড় বড় ডিগ্রি নিতে হয়। এই ডিগ্রিগুলি এক একটি সাইনবোর্ড। আর যারা সৃষ্টি করেন তাদের কাধের পর সাইনবোর্ড থাকে না, তারা সবার জন্য। সবার জন্য যে জ্ঞান তার নাম সুফিবাদ। সুতরাং সুফিবাদ ধর্মকে অনুসরন করে, কিন্তু অনুকরন করে না।

বাবা জাহাঙ্গীর এর বানী - Baba Jahangir
বাবা জাহাঙ্গীর এর বানী – Baba Jahangir

কুকুর লেজ নাড়ায়, কিন্তু লেজ কখন কুকুরকে নাড়াতে পারে না। সৃষ্টি করার জ্ঞান স্কুল-কলেজ হতে পাওয়া যায় না। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, লালন, পাঞ্জু শাহ, দুদ্দু শাহ, মনমহন, দ্বিজদাস,জগদীশ – এরা সৃষ্টি করার প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন। এরা সবসময় গালবাতের হালে থাকেন। মোহমুক্ত হয়ে যে জীবনটি দাঁড়িয়ে থাকে সেই জীবনটিকে গালবাতের হাল বলা হয়। ইবাদত -বন্দেগী, পূজা-প্রার্থনা করতে হয় মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা, কালিশায়। এক ঘন্টা জ্ঞান অর্জন করা ৭০ বছর (বেরিয়া)ইবাদতের চেয়ে উত্তম। তাহলে সাধারন মানুষদের অনুরোধ করছি, একটু চিন্তা করুন, গবেষনা করুন, সত্তর বছরে কত ঘন্টা হয়? আটষট্টি হাজার চারশ ঘন্টায় সত্তর বছর হয়। তাহলে ফলটি কী দাঁড়াল? একটি ইবাদতখানা, একটি পূজা করার মন্দির, গির্জা,প্যাগোডা, কালিশা, গুরুদোয়ার: বহু নামে পরিচিত স্থানগুলো হতে আটষট্টি হাজার চারশ গুন পবিত্র যে ঘরে সৃজনীজ্ঞান অর্জন করা হয়। অনুসরন-অনুকরন এই জ্ঞান দিতে পারে না। এই জ্ঞান দিতে পারে কেবলমাত্র প্রেম, ভালবাসা, মোহাব্বত, ইশক, উলফাত, হাব্বুন। তাই সুফিবাদ এর ধর্মই হলো প্রেম। সুতরাং যেখানে প্রেম নাই সেখানে সুফিবাদ নাই। কতগুল কথা শেখা প্রেম নয়। চোখের জল, কান্না, চিৎকার, নৃত্য করা এগুলো প্রেমের কিছুটা লক্ষন। এই লক্ষনগুলো যাদের মধ্যে নাই তারা কাষ্ঠ ধর্মের অনুসারী। তাই সমগ্র পৃথিবীকে শান্তি দিতে পারে প্রেম নামক ধর্মের বাহন সুফিবাদ। সুফিবাদই প্রথম, সুফিবাদই শেষ, সুফিবাদই বেচ্যাইন সৃষ্টি করে।

বাবা জাহাঙ্গীর এর বানী - Baba Jahangir
বাবা জাহাঙ্গীর এর বানী – Baba Jahangir

তাই সুফিবাদ যারা করে থাকে তারা জবাই করা মুরগির মত ছাটফট করে। সুফিরা বলে, ওরাই তো আনন্দে আছে, ওরাই তো আরামে আছে যারা জীবনেও আরাম পায় নাই। তাইত মাওলানা জালাল উদ্দীন রুমি বলে গেছেন: “উস দিওয়ানা দিওয়ানা না শোদ” তথা যে পাগল হয় নাই সেইত আসল পাগল। হজরত জিগার মুরাদাবাদী বলে গেছেন, “ঐ মানুষটি হুশের মধ্যে আছে,যার কোন হুশ নাই”। সুতরাং হে মানুষ, তুমি যদি সত্যসাগরে অবগাহন করতে চাও তাহলে সাহসের সাথে সুফিবাদকে গ্রহণ করো।

-মারেফতের গোপন আলোচনা
ডা. বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী

Author

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here