
প্রেমের বয়ান
-বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী
“ইয়া মালো ধৌলতে দুনিয়া ইয়ে রিস্তা আতে ব্যন
খোদানে ব্যহেমু-গোমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
ইয়ে আগার চে বুত হে যাওয়া-আপকি আস্তিনোনে
মুঝে হে হুকমে আদা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”
-আল্লামা ইকবাল
হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নবম শক্তিতে ঔষধের কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় না। তা হলে এক হাজার শক্তিতে কী থাকতে পারে? অথবা একলক্ষ কিংবা দশলক্ষ শক্তিতে? ঔষধের কোনোই অস্তিত্ব নেই, কিন্তু অস্তিত্বহীন ঔষধ রোগের মূলে গিয়ে আঘাত করছে। ঔষধ নেই অথচ শক্তি আছে- এ কেমন কথা?
এক ফোঁটা ধাতুর(সিমেন) মধ্যে কোটি কোটি শুক্রকীট (স্পারমাটোজা) হতে একটি কীটের ক্রমবিকাশের পূর্ণাঙ্গ রূপটি হলো মানুষ। আরও একটু তলিয়ে দেখি, দেখি এই ধাতু কোথা হতে এলা? শ্বেত (এ্যালবুমিন) ও লৌহকণিকার (হিমোগ্লোবিন) মিশ্রিত রূপ রক্ত হতে ধাতুর জন্ম । রক্ত কোথা হতে এলো? খাদ্যদ্রব্য হতে রক্তের জন্ম । খাদ্যদ্রব্য কোথা হতে এল? মাটি, পানি, আলো এবং বাতাস হতে খাদ্যদ্রব্যের জন্ম। মাটি, পানি, আলো এবং বাতাস কোথা হতে এলো?
এভাবে পর পর চিন্তা করলে , আসল মূল কোথায়, এর উত্তর খুঁজতে গেলেই নিজেকে চেনার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, নিজেকে চিনতে পারলেই আল্লাহকে চেনা হয়ে যায় বলে ইসলাম ঘোষণা করেছে এবং ইহাই ইসলামের একমাত্র উপদেশ । দ্বিতীয় কোনো উপদেশ ইসলাম দেয়নি। আল্লাহ এক কিন্তু তাঁর গুণাবলি অনেক । অনেক গুণাবলির মধ্যে সবচাইতে প্রিয় গুণটি তাঁর কী? ইচ্ছা তাঁর সবচাইতে প্রিয় গুণ। সব গুণগুলোই ‘ইচ্ছা’ নামক গুণের অধীন। ‘ইচ্ছা’ হলো সকল গুণের নেতা বা সরদার।
কিন্তু এই শীর্ষস্থানীয় ‘ইচ্ছা’ গুণটিও একদম বেকার হয়ে পড়ে কখন, কোথায় এবং কার কাছে? তিনটি প্রশ্নের একটি ছোট্ট উত্তর হলো প্রেমের তথা ইশকের কাছে ‘ইচ্ছা’ বেকার হয়ে পড়ে। প্রেমের তথা ইশকের আগুন যখন প্রেমিকের তথা আশেকের মনে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে, ‘ইচ্ছা’র দৃঢ় বাঁধনও তাকে থামিয়ে দিতে পারে না। মৃত্যুর যাতনাও প্রেমের কাছে তুচ্ছ। আইন-কানুন, রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠান, ছোট-বড়, রাজা-প্রজা, কোনো কিছুই প্রেমকে বেঁধে রাখতে পারে না।
যেন একটি জ্বলন্ত আগুনের টুকরো । কে এগিয়ে যাবে নীতির আঁচলে প্রেমকে বেঁধে রাখতে ? সব কিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে একাকার করে দেয় এই প্রেম। তাই তো জেনে-শুনেই সত্যদ্রষ্টা আদম খেয়েছিলেন নিষিদ্ধ গাছের ফল। জেনে-শুনেই আজাজিল ওরফে শয়তান গলায় নিয়েছেন কলঙ্কের মালা।