
হযরত আমির খসরুর কালাম অনুবাদ
অনুবাদ: বাবা জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী
১
চশম-ই-মাস্তে আজাবে,
জুলফ-ই-দরেজ আজাবে
ওগো মাহবুবে এলাহি নিজামুদ্দিন আউলিয়া তোমার সেই মাস্তি চোখ কি অপূর্ব!
তোমার এই লম্বা চুল কত অপূর্ব!
২
ম্যায়-পারাস্তে আজাবে,
ফিতনা তারাজে আজাবে!
(আমি আল্লাহ রাসূলের পূজা ছেড়ে দিয়েছি) এই ছেড়ে আমি যে আপনার পূজা করি আমিও অপূর্ব, এবং আমি আল্লাহর পূজা ছেড়ে দিয়েছি তাই মানুষ যে আমাকে ঠাট্টা বিদ্রূপ বা টিটকারী করতেছে সেটাও অপূর্ব।
৩
বাহার-ই-কতালাম চু কা শাদ,
তেগ না হাম সার-বা-সুজুদ
কি অপূর্ব ভাবে তুমি আমাকে খুন করলা! তরবারি নয়, বরং খালি হাতে।কখন? যখন আমি সেজদায় তোমার কাছে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করলাম তখন দেখলাম আমার আমিত্বের গলায় ছুরি দিয়ে তোমার বুকে একাকার করে নিলে।
৪
উবা নাজে আজাবে,
মান বা-নিয়াজে আজাবে!
মোরশেদ, আমার কাটা মুন্ডুটাও (মাথাটা) অপূর্ব, আমার মনের কত বড় শক্তি আর মোহাব্বত দিয়েছিলে যে আমি এই মাথাটা তোমাকে দিতে পেরেছি। সেই আমার মনের শক্তি এবং প্রেমও অপূর্ব।
৫
তাকিয়ে আব রুয়ে তু সাজদায়ে সারনিবা সুজুদ,
চাশমে বাদ্দুর কি হাসতাম বা নিজামী-য়ে-আজাবে!
আপনাকে যখন আমি ধ্যান করতে করতে আমার মধ্যে এনে ফেললাম এবং আমি সম্পূর্ণরূপে গিলে ফেললাম (হাসতাম) অর্থাৎ আপনি আমার মধ্যে যখন সম্পূর্ণ সমাসীন হয়ে গেলেন আর আমি নাই হয়ে গেলাম, আমার মধ্যে আপনি। তখন আমি দেখি আমার চোখের সামনের যেই মুর্শিদ যিনি খায়, ঘুমায়, পায়খানা করে এই মুর্শিদ আর সেই মুর্শিদ তো এক নয় অন্যরকম।
৬
ওয়াক্ত-ই-বিসমিল শুদ আনাম চশমে বা-রুয়াশ বাজ আস্ত
মেহেরবানে আজাবে, বান্দানওয়াজে আজাবে!
মোরশেদ, তুমি যখন আমার আমিত্বের গলায় ছুরি চালিয়ে আমাকে হত্যা করলে, কেবল তখনই আমার চোখ তোমার নূরময় চেহারার দর্শণ লাভ করল।
কী অপূর্ব তোমার মেহরেবানী! কী অপূর্ব তোমার বিশেষ দান!
৭
বুল-আজব হুসন-ও-জামাল খাত-ও-খাল-ও-গেসু
সারওয়াকাদ্দে আজাবে, কামাত-এ-নাজে আজাবে।
ওগো মাহবুবে এলাহী নিজামুদ্দিন আউলিয়া, একি প্রেম খেলা খেলছেন যে খেলায় কত সুন্দরীরা আপনার পাশে ঘুরঘুর করে ঘুরছে, কিন্তু আপনার কি অপূর্ব মিলন! যে মিলনে বীর্য নির্গত হয় না। (কথাটি নেগেটিভে নিলে বদমাইশি হবে কিন্তু পজেটিভে নিলে অন্যরকম। অনেকটা সার্জেন্টের চাকু আর কসাইয়ের চাকুর মতন।)
৮
হাক্ব মাঙগো কালমা-ই-কুফুর আস্ত দার ইন যা খসরু
রাজদানে আজাবে, সাহিব-ই-রাজ-ই আজাবে
এই চরম ও গোপনীয় সত্যকে প্রকাশ করতে যেও না খসরু, কারন এই জগতে সত্য অস্বিকারকারীর অভাব নেই। আহ্! কি অপূর্ব তোমার গোপনীয়তা! আর তুমি কত অপূর্বভাবেই না তোমার গোপন জ্ঞানের ভান্ডটিকে পর্দার আরালে ঢেকে রাখো!
( বি:দ্র: ৬ ও ৮ নং স্তবকের অনুবাদ সংগৃহীত )